দোলনায় দুলে কেটে যায় আমাদের শৈশবের অনেকটা সময়। শুধু শৈশব কেন,
জীবনের যেকোনো সময়েই দোলনা হতে পারে মানুষের সঙ্গী। আঙ্গিনার আমগাছের শাখে
দোলনায় দুলে হোক আর বাড়ির এক চিলতে বারান্দায় দোলনায় দুলে হোক –
প্রশান্তি ও আনন্দ মনকে ছুঁয়ে যাবেই!
দোলনা হতে পারে গৃহসজ্জার অনুষঙ্গও। এতে যেমন প্রকাশ পাবে শৌখিন মনোভাব,
তেমনি চমত্কার কেটে যাবে অবসর সময়গুলো। অলস দুপুর, মনোরম বিকেল অথবা
সারাদিনের কাজ থেকে ফিরে ক্লান্তিময় সময়টুকু দোলনায় দোল খেতে খেতে চায়ে
চুমুক দিয়ে অথবা বই পড়ে ভালোই লাগে । বসার ঘর, শোবার ঘর, বারান্দায়,
ছাদে বা উঠোনে – যেকোনো জায়গায় ঝোলাতে পারি শখের দোলনা।
অন্দরমহলে দোলনার ব্যবহার নিয়ে রয়েছে নানাজনের নানা জল্পনা-কল্পনা। ঘরের
ভেতর বিভিন্ন জায়গায় দোলনার ব্যবহার তো রয়েছেই আর বাগান ও ছাদে রয়েছে
দোলনার একক আধিপত্য।
বাগান ও ছাদ :
যারা একটু শৌখিন তারা বাসার সামনে বিশাল জায়গায় বাড়ির লন, উঠান অথবা
ছাদে একটি দোলনা রাখতে পছন্দ করেন। তবে সে ক্ষেত্রে ম্যাটারিয়ালের দিকে
একটু নজর রাখতে হবে। সাধারণত এসব স্থানের জন্য ব্যবহার করা ভালো বাঁশ,
স্টিল ও আয়রনের দোলনা। যেহেতু জায়গাটাই অন্দরমহলের বাইরে সেহেতু সেখানে
ঝড়-বৃষ্টি, ধুলা-বালু প্রবেশের সম্ভাবনাই বেশি।
সে জন্য এ ধরনের ম্যাটারিয়ালের দোলনা সহজেই পরিষ্কার করা যায়। গাছের ডাল
কেটেও আপনি তৈরি করে নিতে পারেন নিজের পছন্দসই দোলনা। সে ক্ষেত্রে সঙ্গে
রাখুন দড়ি দিয়ে তৈরিকৃত দোলনা। দোলনার চারপাশে ঝুলিয়ে দিন নানা ধরনের
ডেকোরেটিভ আইটেম। মাটির ঘণ্টা, হারিকেনের পাশাপাশি শিকেতেও ঝুলিয়ে দিতে
পারেন এসব নান্দনিক জিনিস। কাঠের দোলনা বাইরে ব্যবহার না করাই ভালো। পানি
লাগলেই এ দোলনা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডসহ
দোলনা ব্যবহার করা উচিত, যাতে আপনি দরকার হলেই সরিয়ে নিতে পারেন এক জায়গা
থেকে অন্য জায়গায়।
বারান্দা :
যাদের বারান্দা একটু বড় তারা অনায়াসে একটি দোলনা রেখে দিতে পারেন এক
কর্নারে। তবে সেই ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডসহ দোলনা হলেই ভালো। তাহলে আপনি
কিছুদিন পরপর ঘর নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারবেন আসবাব স্থান বদল
করে। আর যদি জায়গা না থাকে তাহলে বারান্দার ছাদ থেকে ঝুলিয়ে দিন মাঝারি
সাইজের একটি দোলনা। বারান্দার জন্য বেতের অথবা রড আয়রনের দোলনা উত্তম। আর
আপনার পছন্দমতো রঙ করিয়ে আশপাশ ইনডোর প্লান্ট দিয়ে সাজিয়ে রাখুন
বারান্দাটি।
লিভিংরুম বা বেডরুম :
লিভিংরুম অথবা বেডরুমের দোলনা নির্বাচন করুন সে রুমের ফার্নিচারের সঙ্গে
মিল রেখে। আপনার ফার্নিচার যদি কাঠের হয় সে ক্ষেত্রে কাঠের দোলনা ব্যবহার
করুন। অবশ্যই ফার্নিচারের রঙের দিকে লক্ষ্য রাখবেন। দোলনা সাধারণত ঘরের এক
কর্নারে রাখা ভালো। এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে লোকজনের যাতায়াত একটু কম।
বাচ্চাদের রুম :
বাচ্চাদের রুমে দোলনা না দেওয়াই ভালো। আর যদি দিতে চান তাহলে লো হাইটের
দিতে হবে, যাতে খুব উঁচু থেকে পড়ে গিয়ে ব্যথা না পায়। বাচ্চাদের রুমে
দোলনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কালারফুল দোলনা নির্বাচন করুন। যদি সম্ভব হয় তাহলে
নানা ধরনের কার্টুনের থিম দিয়ে তৈরি করুন দোলনাটি। দোলনায় বসে যাতে ব্যথা
না লাগে সে জন্য ফোম দিয়ে গদি তৈরি করে তার দুই পাশে রেখে দিন কিছু ম্যাচিং
কুশন। কারুকার্যময় দোলনা কেনার আগে ভালোভাবে ডিজাইনের দিকে লক্ষ্য করুন।
এমন ডিজাইন নির্বাচন করুন যাতে বসলে ব্যথা না লাগে।
সম্ভব হলে বেডরুমে জানালার পাশে দোলনা রাখার চেষ্টা করুন। এতে অবসর সময়ে বই পড়া অথবা গান শোনার এক অসাধারণ পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

0 comments: